উপন্যাস: লালসালু (১৯৪৮), চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪), কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৮৬৮)।
লালসালু: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ প্রথম ‘লালসালু’ (১ম প্রকাশ ১৯৪৮, ২য় প্রকাশ ১৯৬০) উপন্যাস লিখে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলাদেশের সাহিত্যে যে সব উপন্যাস প্রবল আলোড়ন তুলতে সমর্থ হয়েছে ‘লালসালু’ তাদের মধ্যে অন্যতম। গ্রামীণ জীবনের পটভ‚মিতে এ উপন্যাস রচিত। ধর্মের নামে স্বার্থান্ধ মানুষের কার্যকলাপ এখানে রূপলাভ করেছে। গ্রাম-বাংলার বাস্তব চিত্র অঙ্কনে এ উপন্যাসটি অত্যন্ত মূল্যবান। এ উপন্যাসে ধর্মীয় ভÐামির নিখুঁত চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ‘মজিদ’ লালসালু উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। ধর্মকে ব্যবহার করে মজিদ কীভাবে গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করল এবং ধর্মব্যবসার ভিত্তি রচনা করল- এটাই ‘লালসালু’ উপন্যাসের উপজীব্য।
চরিত্র: মজিদ, খালেক ব্যাপারী, জমিলা, রহিমা, হাসুনীর মা, আক্কাস।
কাঁদো নদী কাঁদো : ১৯৬৮ সালে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত চেতনা প্রবাহরীতির একটি উপন্যাস।
বৈশিষ্ট্য: আঙ্গিক প্রকরণে পাশ্চাত্যের প্রভাব থাকলেও এর সমাজজীবন, পরিবেশ ও চরিত্রাদি স্বদেশীয়। শুকিয়ে যাওয়া বাকাল নদীর প্রভাবতাড়িত কুমুরভাঙ্গার মানুষের জীবনচিত্র এতে অঙ্কিত হয়েছে।
চরিত্র ও বিষয়বস্তু: তবারক ভুইয়া নামে এক স্টিমারযাত্রীর মুখে বিবৃত কুমুরডাঙ্গার ছোট হাকিম মুহাম্মদ মুস্তফার জীবনালেখ্য ও জীবনের ইতিকথা এর বিষয়বস্তু।
‘চাঁদের অমাবস্যা’ মনোসমীক্ষণমূলক উপন্যাস।
ছোটগল্প :
খ্যাতনামা সাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর দুটি গল্পগ্রন্থে বিশেষ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর বেশিরভাগ গল্পে গ্রামবাংলার ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বাস্তবসম্মত চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। গল্পসমূহে মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ লক্ষণীয়। বাংলা সাহিত্যে তাঁর গল্পসমূহ শৈল্পিক বিচারে বিশিষ্টতার দাবিদার।
নয়নচারা (১৯৫১) (চরিত্র : আমু), না কান্দে বুবু, দুই তীর ও অন্যান্য গল্প (১৯৬৫) ইত্যাদি।
নাটক: তরঙ্গভঙ্গ, বহিপীর, উজানে মৃত্যু, সুড়ঙ্গ। ‘বহিপীর’ তাঁর পুরস্কারপ্রাপ্ত নাটক।